বিএনপি নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর দীর্ঘ সাড়ে ১৭ বছরের বেশি সময় কারাভোগের পর কারামুক্ত হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ২টায় কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। কারামুক্তির পর কারা ফটকে ফুলের মালা দিয়ে তাকে বরণ করে নেন স্বজন ও হাজার হাজার নেতাকর্মীরা।
নেত্রকোনা-৪ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যের মুক্তির খবর পেয়ে এলাকা থেকে দলে দলে লোকজন কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসেন। সকাল থেকেই নেতার মুক্তির অপেক্ষায় কারাগারের সামনে অবস্থান করছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
কারামুক্তির পর কারা ফটক থেকে লুৎফুজ্জামান বাবরকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন তারা। মুক্তি পাওয়ার পর গলায় ফুলের মালা পরা বাবরকে হুডখোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়াতে দেখা যায়।
কারাগারের সামনে বিএনপির কর্মী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আজ আমরা অনেক আনন্দিত, আমাদের প্রিয় নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর নিরপরাধ। তার জনপ্রিয়তায় হিংসা ও পার্শ্ববর্তী দেশের আনুকূল্য পেতে শেখ হাসিনা অবৈধভাবে সাজানো মামলায় তাকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছিল। তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।
লুৎফুজ্জামান বাবর জাতীয়তাবাদী একজন সাহসী নেতা। তাই তাকে বিনাদোষে দীর্ঘ ১৭ বছর কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে।’
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২৮ মে লুৎফুজ্জামান বাবরকে গ্রেফতার করা হয়। জরুরি অবস্থার সেই দুই বছর এবং পরে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে কয়েকটি মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড হয়, একটিতে হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আপিল শুনানি শেষে একে একে এসব মামলায় খালাস পান বাবর।
গত ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির এক মামলায় ৮ বছরের দণ্ড থেকে খালাস পান বাবর। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ডের আসামি বাবরসহ সব আসামিকে গত ১ ডিসেম্বর খালাস দেন হাইকোর্ট।
১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাতেও বাবরের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। আর অস্ত্র আইনের পৃথক মামলায় হয়েছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। গত ১৮ ডিসেম্বর ও ১৪ জানুয়ারি আপিলের রায়ে হাইকোর্ট দুই মামলাতেই বাবরকে খালাস দিলে তার মুক্তির পথ খোলে।
লুৎফুজ্জামান বাবর ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরি) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। (বাসস)