সাহেদকে গ্রেফতারে রাজধানী ঢাকা ও মৌলভীবাজারে অভিযান চলছে

রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে গ্রেফতার করতে রাজধানী ঢাকা ও মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের শমসেরনগরসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালছে।
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি সুজয় সরকার আজ বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাকে ধরতে এলিট ফোর্স র‌্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
তিনি জানান, রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদকে ধরতে রাজধানীতে গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানোসহ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সোমবার মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সাহেদকে ধরতে শমসেরনগর এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে। সেখানে আজও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।
সাহেদের ফোন ট্র্যাক করে তার অবস্থান নির্ধারণের চেষ্টা চলছে। আজ সকালে সেখানে তার অবস্থান বুঝতে পারায় জেলাজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে র‌্যাব ও পুলিশ। জেলার সব সীমান্ত, রিসোর্ট, হোটেল মোটেলেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে । সাহেদের সবশেষ অবস্থান কমলগঞ্জের শমসেরনগর বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সাহেদ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত যেতে পারে বলে সন্দেহে করা হচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে শমশেরনগর চৌমুহনা থেকে ভারতের ত্রিপুরাগামী সড়কের মুখে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা যানবাহন তল্লাশি শুরু করেন। সেইসঙ্গে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন রেস্ট হাউজে অভিযান চালাচ্ছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
কমলগঞ্জের শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী আজ স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা গেছে মো. সাহেদ চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা প্রবেশ করতে পারেন। তাই তাকে ধরার জন্য সতর্কতামূলক তদারকি চালাচ্ছে পুলিশ। আজও সাহেদকে ধরতে অভিযান চলছে।
এদিকে, শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মো. সোহেল রানা আজ গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার ও আজ সকালে র‌্যাবের পাশাপাশি পুলিশের অভিযান চলেছে শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। সাহেদ মৌলভীবাজারে আছে এমন তথ্য আছে, তবে, কোথায় অবস্থান করছে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
এবিষয়ে জানতে মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান আজ মঙ্গলবার স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন, সাহেদকে গ্রেফতারের জন্য মূলত র‌্যাব এ অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশ তাদের সহায়তা করছে। তবে, সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয় যে সাহেদ এখন মৌলভীবাজারেই আছে। আমরা তাকে ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।
এদিকে, ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ ও মামলা সুত্রে জানা যায়, গত ৬ জুলাই র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। পরীক্ষা ছাড়াই করোনার সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে অভিযোগে এ অভিযান চালানো হয়।
ঘটনার পরদিন গত ৭ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশে র‌্যাব রিজেন্ট হাসপাতাল ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেয়। রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ওই দিনই উত্তরা পশ্চিম থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। এঘটনার পর থেকে গত ৯ দিন ধরে সাহেদ পলাতক রয়েছে।
এদিকে, উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তপন চন্দ্র সাহা আজ বাসসকে জানান, প্রতারণা ও টাকা আতœসাৎ মামলার প্রধান আসামী রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে ধরতে গত ৯ দিন ধরে অভিযান চলছে। তাকে গ্রেফতার করতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালাচ্ছে।
ওসি জানান, ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত ৭জন আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামীসহ বাকীদেরকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।