বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ব্যাংক হিসাবে একই দিনে দুই ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব থেকে পে-অর্ডারে মাধ্যমে ৪ কোটি টাকা জমা দেওয়া অর্থ বাড়ি বিক্রির বিল পরিশোধ ছিলো বলে জানিয়েছেন ওই দুই ব্যবসায়ীর আইনজীবীরা।
রোববার (০৬ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার সঙ্গে আসা তাদের আইনজীবী আফাজ মাহমুদ রুবেল এবং নাজমুল আলম সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন।
আইনজীবীরা দাবি করেন, এস কে সিনহার উত্তরার ৬ তলা বাড়িটি ৫ কাঠা জমির ওপর ছিল। এ বাড়িটি ২০১৬ সালের শুরু দিকে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা শান্ত্রি রায় ৬ কোটি টাকায় ক্রয় করেন। এ সময় বায়না দলিলকালে তিনি ২ কোটি টাকা পরিশোধ করেছিলেন। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য নিরঞ্জন ও শাহজাহানের সহযোগিতা নেন।
নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা শান্ত্রি রায়ের স্বামী রনজিতের চাচা (চাচা শশুর)। আর শাহজাহান রনজিতের বন্ধু।
আইনজীবীরা বলেন, বাড়ি কিনতে বাকি ৪ কোটি টাকা ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে নিরঞ্জন ও শাহজাহান ২ কোটি টাকা করে মোট ৪ কোটি টাকা ঋণ নেন। ঋণ পরিশোধে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে শান্ত্রি রায় জামিনদার হন। জামিনদার হিসেবে টাঙ্গাইল ও ঢাকার আশে-পাশের বেশকিছু জমি বন্ধক রাখেন শান্ত্রি।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, ২০১৬ সালের মে মাসে জমির বায়না দলিল হয় এবং ওই বছরের ৮ নভেম্বর দুটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এস কে সিনহা সোনালি ব্যাংক সুপ্রিম কোর্ট শাখার মাধ্যমে চার কোটি টাকা গ্রহণ করেন। পে-অর্ডারের পরে ২৪ নভেম্বর হস্তান্তর দলিলের মাধ্যমে বাড়িটি শান্ত্রি রায়কে বুঝিয়ে দেন।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, সকাল ১০টা থেকে ওই দুই ব্যবসায়িকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। অভিযোগ অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন সাহাকে দুদকে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
ওই দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন সাহা ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ঋণ হিসাব খোলার পর ৮ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নামে দুই কোটি টাকার পে-অর্ডারের জন্য আবেদন করেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পে-অর্ডার ইস্যু করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যথাক্রমে (পে-অর্ডার নম্বর-০০৯২০৪৬) এবং (পে-অর্ডার নম্বর-০০৯২০৪৭) নম্বরে। এই পে-অর্ডারের পর তাদের হিসাবে আর কোনো লেনদেন হয়নি। লেনদেনের সময় তাদের টিআইএন নম্বরও ব্যবহার করেনি
আজকের বাজার/ এমএইচ