সিনহার ছুটি: ‘বিশ্বাসযোগ্য’ ব্যাখ্যা চায় বাম দলগুলো

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ছুটি ও বিদেশ যাওয়াকে কেন্দ্র করে দেশবাসীর মনে যে সন্দেহ, অবিশ্বাস ও আশংকার সৃষ্টি হয়েছে অনতিবিলম্বে এর বিশ্বাসযোগ্য পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা দিতে সরকার ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা।

৮ অক্টোবর রাজধানীর পুরানা পল্টন কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতাদের এক সভায় গৃহীত প্রস্তাবে এ আহ্বান জানানো হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়, ‘সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণার পর থেকে উচ্চ আদালত, বিশেষ করে মাননীয় প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সরকার ও সরকারি দল কর্তৃক সংসদের ভেতরে ও বাইরে যে অশালীন ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখা হয়েছে তাতে জনগণের মধ্যে এই ধারণা প্রবল হয়ে উঠেছে যে, সরকার নানামুখি চাপ ও হুমকি দিয়ে প্রধান বিচপরপতিকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করেছে। এই ধরনের তৎপরতা বিচার বিভাগের অবশিষ্ট স্বাধীনতাকে হরণ করে বিচার বিভাগকে কার্যত নির্বাহী বিভাগের অধীনস্ত করবে এবং সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ করবে।’

প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়, ‘এই ধরনের পরিস্থিতি সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতাকে আরো পাকাপোক্ত করবে এবং ফ্যাসিবাদের বিপদ আরও বাড়িয়ে তুলবে; গভীর খাদে নিপতিত হবে গণতন্ত্র ও দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত।’

প্রস্তাবে বলা হয়, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় ও প্রধান বিচারপতিকে কেন্দ্র করে তৈরি বিতর্ক আওয়ামী লীগ-বিএনপির ক্ষমতাকেন্দ্রিক পাল্টাপাল্টি দলীয় রাজনীতির বিষয় হতে পারে না; এর সাথে যুক্ত রয়েছে বিচার বিভাগসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠাসমূহের সক্রিয় স্বাধীন ভূমিকা; রাষ্ট্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতা ও এক্তিয়ারের গণতান্ত্রিক ভারসাম্যের প্রশ্ন। সংবিধান স্বীকৃত এই ভারসাম্য নিশ্চিত করা না গেলে দেশ আরও গভীর সংকটে নিমজ্জিত হবে।’

সভায় দেশের এই সংকটজনক অবস্থায় সতর্ক থাকার ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ রক্ষায় দৃঢ় ভূমিকা রাখতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান হয়।

সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক কমরেড জোনায়েদ সাকি, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমরেড হামিদুল হকসহ আরো অনেকে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৮ অক্টোবর ২০১৭