ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনে পরিবর্তন আনবেন – আইনমন্ত্রীর আনিসুল হকের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
এক কে সিনহা বলেন, প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কিংবা সরকারের হস্তক্ষেপ করার কোনো রেওয়াজ নেই। তিনি শুধুমাত্র রুটিনমাফিক দৈনন্দিন কাজ করবেন। এটিই হয়ে আসছে। তাই প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করলে সেটি উচ্চ আদালতে সরকারের হস্তক্ষেপ হিসেবেই বিবেচিত হবে বলে উল্লেখ করেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
তিনি বলেন, এর দ্বারা বিচার বিভাগ ও সরকারের সম্পর্কে আরও অবনতি হবে। এটি রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।
গতকাল প্রধান বিচারপতির প্যাডে লেখা সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সরকারের একটি মহল আমার রায়কে ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করে পরিবেশন করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার প্রতি অভিমান করেছেন, যা অচিরেই দূরীভূত হবে বলে আমার বিশ্বাস। সেই সাথে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে আমি একটু শঙ্কিত বটে।
এক কে সিনহা লিখেছেন, আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। কিন্তু ইদানিং একটি রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহল, আইনজীবী ও বিশেষভাবে সরকারের মাননীয় কয়েকজন মন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে সমালোচনা করেছেন, এতে আমি সত্যিই বিব্রত।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পূর্ণাঙ্গ রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে গত ৩ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসের ছুটি নেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। পরে ১৩ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বিদেশে অবস্থান করতে চান, বিষয়টি উল্লেখ করে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১০ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির কাছে একটি চিঠি পাঠান প্রধান বিচারপতি।
১২ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ২ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে বা তার কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা।
আজকের বাজার : এমএম / ১৪ অক্টোবর ২০১৭