সুষ্ঠু তদারকির অভাবে টেকসই সবুজ প্রবৃদ্ধি নিয়ে সংশয়

বাংলাদেশে সবুজ প্রবৃদ্ধির অনেক অগ্রগতি হলেও শেষ পর্যন্ত টেকসই হবে কিনা এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন এই খাতের সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নে ঘাটতি আর দক্ষ জনবলের অভাবে সব ভালো উদ্যোগই সুরক্ষা দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে চেম্বার ভবনে ‘পরিবেশ বান্ধব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি’ শীর্ষক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ইউকেএইড ও বেসরকারী খাত উন্নয়ন-পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অ্যাডাম স্মিথ ইন্টারন্যাল র্(এএসআই) যৌথভাবে সংলাপের আয়োজন করে।

সংলাপে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ডিএফআইডির বেসরকারী খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা আফসানা ইসলাম এবং এএসআইয়ের বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক সুভ্রজিত চট্টপাধ্যায় অংশগ্রহণ করেন। সংগঠনের সভাপতি নিহাদ কবিরের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি) পরিচালক ড. সালেমুল হক।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সবুজ প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে নিরব বিপ্লব ঘটেছে। পোশাক খাতের শুরুটা পরিকল্পিতভাবে না হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল কমপ¬ায়েন্স,নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং শ্রমিক কল্যাণে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। এরই মধ্যে পোশাক খাতে সবুজ শিল্পায়নে একটি নিরব বিপ্লব ঘটেছে। দেশে এখন পর্যন্ত ৬৭টি পোশাক কারখানা ইউএস গ্রীন বিল্ডিং কাউন্সিল থেকে লিড সনদ লাভ করেছে। এরমধ্যে ১৬টি প্লাটিনাম ও ৩৪টি গোল্ড সনদ প্রাপ্ত। বিশ্বের ১০টি লিড প¬াটিনাম ফ্যাক্টরির মধ্যে বাংলাদেশেই সাতটি। আরো ২৮০টি কারখানা সার্টিফিকেশনের জন্য ইউএসজিবিসিতে নিবন্ধিত আছে।

তৈরী পোশাক খাতের সংগঠন বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি মো. ফজলুল হক বলেন, গ্রীণ কারখানা হওয়ার পরও ক্রেতাদের কাছ থেকে আমরা নায্য দাম পাই না। তবে আমাদের ক্রেতা পছন্দের ক্ষেত্রে সক্ষমতা বেড়েছে। আমাদের ব্যবসাকে টেকসই করতে বর্তমানে এক ক্রেতার উপর নির্ভরশীল নই। একজন গেলেও অন্য ক্রেতার জন্য কারখানার দরজা খোলা থাকে।

মার্ক অ্যান্ড স্পেনসারের এদেশীয় ব্যবস্থাপক স্বপ্না ভৌমিক বলেন, দেশের তৈরী পোশাক খাত টেকসই করতে হলে অবকাঠামো খাতে আরো বেশী জোর দিতে হবে।

দেশ গার্মেন্ট’র পরিচালক ভিদিয়া অমৃত খান বলেন, পরিবেশবান্ধব কারখানা হলেও দেশের প্রথম রপ্তানিকারক গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘দেশ’ কারখানার আশাপাশের এলাকা খাল, নালা এবং নর্দমায় বেষ্টিত। এটা দেখে বিদেশী ক্রেতারা আমাদের কারখানা পরিবেশ পরিবেশবান্ধব নয় বলে মন্তব্য করেন।
বিশ্ব ব্যাংকের উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইএফসি’র কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মাশরুর রিয়াজ বলেন, বাংলাদেশের আগামীর চ্যালেঞ্জ পরিবেশ বান্ধব প্রবৃদ্ধি। কিন্তু ২০৪১ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন করতে হলে জিডিপিতে এর অবদান বাড়াতে হবে। এছাড়া পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা কর্মসূচির ওপর জোর দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

রাসেল/