অবৈধভাবে চাল মজুদের দায়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নেতা আব্দুর রশিদ ও লায়েক আলীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন সরকারের ৩ মন্ত্রী। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রোববার এ দুই নেতাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। আব্দুর রশিদ বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং লায়েক আলী সাধারণ সম্পাদক।
১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালযে চাল ব্যবসাযীদের সঙ্গে সরকারের ৩ মন্ত্রী বৈঠক করেন। এরা হলেন- বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। এ সময় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্য সচিব মোহাম্মদ কায়কোবাদ ও খোরশেদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন- চাল সংরক্ষণ ও পরিবহনে বাধ্যতামূলকভাবে পাটের বস্তা ব্যবহারের কারণে চালের দাম বেড়ে যাচ্ছে। চটের বস্তার কারণে প্রতি কেজিতে এক টাকা খরচ বাড়ে। কিন্তু প্লাস্টিকের বস্তা অনেক সাশ্রয়ী। প্লাস্টিকের বস্তায় খরচ হয় মাত্র ১৫/১৬ পয়সা। যদি চটের বস্তা ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা স্থগিত করা হয়, তবে আমদানিতে প্রতি কেজি চালের দাম দুই টাকা কমবে।
পরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এখনই চটের বস্তায় চাল আমদানির সরকারি বাধ্যবাধকতার সিদ্ধান্ত আগামী ৩ মাসের জন্য স্থগিত করা হলো। এখন যে যেভাবে পারেন চাল আমদানি করেন।
তিনি বলেন, বন্যার কারণে সরকারের ধান চাল সংগ্রহ অনেক কম হয়েছে। এছাড়া চাল আমদানির শুল্ক কমানো হয়েছে অনেক দেরিতে। তখন যদি চালের দাম ৩৪ টাকা নির্ধারণ না করে ৪০ টাকা করা হতো, তবে আমরা অনেক চাল দিতে পারতাম। তাই চাল সঙ্কট কাটাতে সকলকে কাজ করতে হবে।
সম্প্রতি আব্দুর রশিদের কুষ্টিয়া ও নওগাঁয় গুদামে অভিযান চালিয়ে অবেধভাবে চাল মজুতের প্রমাণ পায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। নওগাঁয় অভিযানের সময় তার প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর রোববার চাল ব্যবসায়ীদের আরেকটি বৈঠকে এ খবর পেয়ে কুষ্টিয়ার এডিসি ও নওগাঁর ডিসি এবং দুই জেলার পুলিশ সুপারকে রশিদ ও লায়েক আলীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রশিদের মতো লোককে কোন আইনে মাত্র ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি অতিরিক্ত চাল মজুদ করে, যে অপরাধ করেছেন তাতে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল। এ মুহূর্তে আবারও তার গুদামে অভিযান চালান। সেখানে মজুদ করা অতিরিক্ত চাল ও ধান জব্দ করে তাকে গ্রেপ্তার করুন।
এ সময় সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন- আব্দুর রশিদ ও লায়েক আলী বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তারা ষড়যন্ত্র করছেন।