সেহরি না খেলে কি রোজা হয়?

সেহরি শব্দটি আররি ‘সাহর’ শব্দ থেকে এসেছে। শব্দটির অর্থ হল রাতের শেষাংশ। শরিয়াতে রোজা পালনের জন্য মুমিন বান্দা ফজরের পূর্বে যে খাবার গ্রহণ করে থাকে তাকে সেহরি বলা হয়। নবী করীম (সা.) সব সময় রোজা পালনের উদ্দেশ্যে সেহরি করতেন। সেইসঙ্গে তিনি তার প্রিয় উম্মতকেও সেহরি করতে উৎসাহিত করেছেন। বুখারী শরীফের ১৭৮৯ নং হাদীসে আছে, নবী করীম (সা.) বলেন, তোমরা সেহরি খাও। কেননা, সেহরিতে বরকত রয়েছে।

সেহরি খাওয়া ফরজ বা ওয়াজিব নয়, সুন্নাত। সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। আর তাই সেহরির গুরুত্ব ও ফজিলতও রয়েছে। সেহরি সিয়াম পালনের জন্য সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করে। কিন্তু কোন কারণে সেহরি খেতে না পারলে, সিয়াম পালনে কোনো ধরনের অসুবিধা বা আপত্তি নেই।

এমনকি ভুল করা ছাড়া, ইচ্ছা করেও যদি কেউ সেহরি না খান তবুও সিয়াম হয়ে যাবে। কিন্তু এমন ব্যক্তি সেহরির ফজিলত থেকে বঞ্চিত হবেন। সেইসঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে সেহরি না খেলে হয়তো গুনাহগার হতে পারেন। কারণ নবী করীম (সা.) এর হাদিস হলো সেহরি খাওয়া। সুন্নাহকে ইচ্ছাকৃতভাবে পরিহার করা গ্রহণযোগ্য কাজ নয়।

রোজা রাখার জন্য সেহরি খাওয়া জরুরি নয়। বুখারি শরীফের ১৯২৩ নং হাদীসে বর্ণীত, নবী করীম (সা.) বলেন, তোমরা সেহরি খাও, কারণ সেহরিতে বরকত রয়েছে। সুতরাং সেহরী না খেলে সুন্নাত আদায় হয় না। তবে রোজার কোন ক্ষতি হয় না। রোজা হয়ে যায়।

মুসলিম শরীফের ২৬০৪ নং হাদীসে রয়েছে, নবী করীম (সা.) বলেন, আমাদের ও ইহুদী-নাসারাদের রোজার পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া। আর তাই সেহরির গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে নবী করীম (সা.) আরও বলেন, এক ঢুক পানি দিয়ে হলেও সেহরি গ্রহণ করো।

তাই বলা যায়, সেহরি খাওয়ার এ সুযোগ আল্লাহর বিরাট নিয়ামত ও অনুগ্রহ। এ বিষয়ে নবী করীম (সা.) বলেন, তোমরা সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে দিনে রোজা রাখার শক্তি অর্জন করো আর দিনে হালকা ঘুমের মাধ্যমে রাত জেগে ইবাদত করার শক্তি অর্জন করো।

সেহরি খুব ভালো মতো না খেলে তা হবে না, এমনটা ভাবা যাবে না। যদি কেউ জাগতে না পারেন, এমনকি ফজরের ওয়াক্ত হয়ে যায়। তখনও সেহরি গ্রহণ করতে না পারার অজুহাতে রোজা ছেড়ে দেয়া যাবে না। সেহরির সময় শেষ হওয়ার পূর্বে যদি একটু পানিও পান করা যায়। তবে তাই করতে হবে। এতেই সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।

সেহরিতে পেট পূরে খাওয়া জরুরি নয়। বরং যে কোনো খাবার দিয়ে সেহরি গ্রহণ করা যেতে পারে। হাদীস শরীফে আছে, নবী করীম (স.) বলেন, মুমিনের জন্য খেজুর কতই না উত্তম সেহরি। সেইসাথে নির্দিষ্ট সময়ের আগে সেহরি খাওয়াও সুন্নাত। খবর-ডেইলি বাংলাদেশ

আজকের বাজার/আখনূর রহমান