সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ

আপিল বিভাগে জ্যেষ্ঠতার তালিকার দুই নম্বরে থাকা বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আজ শুক্রবার রাষ্ট্রপতি তার নিয়োগ আদেশে স্বাক্ষর করেছেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গভবনের মুখপাত্র মো. জয়নাল আবেদীন।

জয়নাল আবেদীন জানান, আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় নতুন প্রধান বিচারপতিকে শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি।

উল্লেখ, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা বর্তমানে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতার তালিকার প্রথমে ছিলেন তিনি।

এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ২২ জন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ পেলেন। এর মধ্যে ৭ বার জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটল। গত ১৫ বছরের (২০০৩-২০১৮) এসব ঘটনার মধ্যে বিএনপি সরকারের সময় ঘটেছে ২বার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ১ বার এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ঘটল ৪ বার।

বর্তমানে আপিল বিভাগে ৫ জন বিচারপতি রয়েছেন। জ্যেষ্ঠতার ক্রম অনুযায়ী প্রথমে আছেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা। চাকরির বয়স আছে ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। তার পরের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের মেয়াদ আছে ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এর পর ক্রম অনুযায়ী রয়েছেন বিচারপতি মো. ইমান আলী, তিনি অবসরে যাবেন ২০২৩ সালে। এর আছেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, তিনি অবসরে যাবেন ২০২৩ সারে। আর পঞ্চম স্থানে আছেন বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, তিনি অবসরে যাবেন ২০২১ সালে।

উল্লেখ, এদের মধ্য থেকে যে কাউকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার আইনগত কোনো বাধা নেই। সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করিবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে পাস করা সৈয়দ মাহমুদ হোসেন জীবনের শুরুতে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হন। ২০০১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের শেষ বছরে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।

২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মাহমুদ হোসেন আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর তার অবসরে যাওয়ার সময় নির্ধারিত আছে।

এর আগে গত ১০ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তবে এর প্রায় দেড় মাস আগে থেকেই তিনি ছুটিতে ছিলেন। তার ছুটির আবেদন করার পর ১ অক্টোবর থেকে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। আব্দুল ওয়াহহাব মিঞাকে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি করে গেজেটও প্রকাশ করেছিল আইন মন্ত্রণালয়।