সোয়া ৪ লাখ কোটি টাকার বাজেটের অর্থবছর শুরু

আজ পয়লা জুলাই। আজ থেকে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে ২০১৭-১৮ অর্থবছর। শুরু হওয়া এই নতুন অর্থবছরের জন্য ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের’ শিরোনামে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

গত জুন মাসের ১ তারিখে জাতীয় সংসদে পেশ করা এই বাজেট দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেট। হিসাব মতে প্রায় সোয়া ৪ লাখ কোটি টাকার এই বাজেট দেশের ৪৬তম বাজেট। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ১৭তম বাজেট। আর এককভাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের একাদশ বাজেট।

মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি ধরা হয়েছে ২২ লাখ কোটি টাকার বেশি। আর জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

বিশাল আকারের এই বাজেটে ব্যয়ের প্রায় ৭২ শতাংশ অর্থ রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে দুই লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কর হিসেবে ২ লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন মুহিত। ভ্যাটের দিকে নজর রেখে করা এই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার চাইতে ৩৫ শতাংশ বেশি করা হয়েছে।

গত বছরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে ৯১ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। এছাড়া আয়কর ও মুনাফার উপর কর থেকে ৮৫ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়ার আশা করা হয়েছে এবারের বাজেটে।

এছাড়া নতুন বাজেটে আমদানি শুল্ক থেকে ৩০ হাজার ২৩ কোটি টাকা, সম্পূরক শুল্ক থেকে ৩৮ হাজার ৪০১ কোটি টাকা, রপ্তানি শুল্ক থেকে ৪৪ কোটি টাকা, আবগারি শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা এবং অন্যান্য কর ও শুল্ক থেকে ১ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছেন অর্থমন্ত্রী।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের আয় ও ব্যয়ের হিসাবে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে ১ লাখ ১২ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা। এই ঘাটতি পূরণে সহায় অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক ঋণ। ঘাটতির এই পরিমাণ মোট জিডিপির ৫ শতাংশের মতো।

বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ১৩ কোটি টাকা; যার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা যাবে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি)। চলতি অর্থবছরে যা ধরা হয় ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা।

আর অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত অনুন্নয়ন বাজেটের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি। এই অনুন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে ৫৩ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধেই যাবে, যা মোট অনুন্নয়ন ব্যয়ের ২২ শতাংশ।

এছাড়া মোটা দাগে বাজেটে আগামী বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ধরা হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। বর্তমান অর্থবছরে করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা। নারী ও ৬৫ ঊর্ধ্ব করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা। পুঁজিবাজারের মার্জিন ঋণ ও সুদ (১০ লাখ টাকা পর্যন্ত) মওকুফজনিত সুবিধার করযোগ্যতা থেকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ১ জুলাই ২০১৭