সৌদি আরবের সীমান্তবর্তী জিজান প্রদেশের সামতাহ্ এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭ বাংলাদেশির পরিচয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
শনিবার ৬ জানুয়ারি ভোরে সংঘটিত ওই দুর্ঘটনায় প্রথমে ৯ থেকে ১০ জনের নিহতের খবর জানানো হয়। পরে বাংলাদেশ দূতাবাসের জেদ্দা কনস্যুলেটর দুর্ঘটনায় ৭ বাংলাদেশির নিহতের খবর নিশ্চিত করে। তবে নিহতের পরিচয় জানানো সম্ভব হয়নি।
অবশেষে সোমবার জেদ্দা কনস্যুলেটের বরাত দিয়ে রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস উইং নিহতদের নাম ও পরিচয় দিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। অবশ্য ওই দুর্ঘটনায় আরও কয়েকজন বাংলদেশি আহত হলেও তালিকায় তাদের বিষয়ে কোন তথ্য দেয়া হয়নি। যদিও জেদ্দা কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল এফ এম বোরহানউদ্দিন রোববার জানিয়েছিলেন, সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আরও ১৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং এদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা গুরুতর। কিন্তু দূতাবাসের পক্ষ থেকে হাসপতালে ভর্তি হওয়া ওই ১৩ জনের নাম পরিচয় এবং তাদের সর্বশেষ পরিস্থিতির বিষয়ে কোন কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭ বাংলাদেশির যে পরিচয় দূতাবাস থেকে দেয়া হয়েছে তা হলো-
১. মো.ইডেন মিয়া, পাসপোর্ট নম্বর বিজে ০২৩২০৬৫, পিতা: সিরাজ মিয়া, গ্রাম: বীরগাঁও, ওয়ার্ড: ৮, থানা: আলোকবালি, নরসিংদী সদর, জেলা নরসিংদী।
২. শফিকুল সিকদার, পাসপোর্ট নম্বর বিপি ০৪৭২৮৫৩, পিতা: আব্দুল হামিদ, গ্রাম: কস্তুরিপাড়া, উপজেলা: কালিহাতি, জেলা: টাঙ্গাইল।
৩. আমির, পাসপোর্ট নম্বর বিএইচ ০০৬০৮০৭, পিতা: আবু মিয়া, গ্রাম: বাউসিয়া, করিমপুর, নরসিংদী সদর, জেলা নরসিংদী।
৪. মো. দুলাল হোসেইন, পাসপোর্ট নম্বর বিজে ০৮৭৮৬২৩, পাসপোর্ট নং পিতা: আকবর আলী, গ্রাম: বালকদি, শহিদনগর, উপজেলা: কামারকান্দি, জেলা: সিরাজগঞ্জ।
৫. মতিউর রহমান, পাসপোর্ট নম্বর এএফ ৮২৯৭৯২৮ ,পিতা: মো. আলি, গ্রাম: নটেরটাক, ওয়ার্ড নং ০১, আনন্দবাজার, উপজেলা: সোনার গাঁও, জেলা: নারায়ণগঞ্জ।
৬. আমিন মিয়া,পাসপোর্ট নম্বর বিএল ০৩১৮০৮২,পিতা: রহিম মিয়া, গ্রাম: ডুবাইল, জামুরকি, উপজেলা: দেলদুয়ার, জেলা: টাঙ্গাইল।
৭. জসিমউদ্দিন, পাসপোর্ট নম্বর বিএইচ ০২৯৪২১৯, পিতা: আবুল কাসেম, গ্রাম চরহাজিরপুর, বিরাজপুর, উপজেলা হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ।
নিহতদের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতদের মরদেহ দেশে পাঠানো হবে কি না, গতকাল (রবিবার) জানতে চাইলে জেদ্দা কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল এফ এম বোরহানউদ্দিন বলেন, নিহতদের পরিবার চাইলে তাদের মরদেহ দেশে পাঠানো হবে। তবে এ বিষয়ে কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে যেমন সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে, মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করতে হবে। এ প্রতিবেদন হাতে পেতে হবে। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কয়েকদিন দেরি হতে পারে।
নিহতরা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার রাখেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি মৃত ব্যক্তিরা এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী না হয়ে থাকেন এবং তারা যদি আইনগতভাবে দেশটিতে অবস্থান করে থাকেন তবে তারা ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। তবে দুর্ঘটনাটি কার কারণে ঘটেছে সেটি জানার জন্য আমাদের ট্রাফিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৬ জানুয়ারি শেষ রাতে জিজান থেকে ১০০ কি.মি. দূরে ইয়েমেন সীমান্ত এলাকা সামতাহতে সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে। আল-ফালাহ নামের একটি কোম্পানির পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে শনিবার সকালে ট্রাকে করে কাজে যাওয়ার পথে পেছন থেকে এক সৌদি নাগরিকের গাড়ি তাদের গাড়িকে ধাক্কা দেয়। এর ফলে দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে ৭ বাংলাদেশি নিহত হন।
আজকের বাজার:এলকে/ ৯ জানুয়ারি ২০১৮