অনেক কম সময়ে ও স্বল্প খরচে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংকটের সমাধান করা যায় বলে জানিয়েছেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ। রামপাল কয়লাভিত্তিক ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কিন্তু পরিবেশ ধ্বংসকারী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়াও বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ বামপন্থী বিভিন্ন সংগঠন আয়োজিত বিক্ষোভ সামাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ২ বছরের গবেষণা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সংকট নিরসনের মহাপরিকল্পনা সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছি আমরা। সৌর বিদ্যুৎ, বায়ু বিদ্যুৎ এবং বঙ্গোপসাগরের গ্যাস বিদ্যুৎ কাজে লাগিয়ে কম সময়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। যার খরচ অন্যান্য পদ্ধতির চেয়ে অনেক কম। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে বাংলাদেশের শতকরা ১০০ ভাগ মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব। কিন্তু এই প্রস্তাবনা দেওয়ার পর এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করতে ১০ থেকে ২০ বছর সময়ের প্রয়োজন। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবন বিনাশকারী দাবি করে দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্প বাদ দিয়ে কম খরচে পরিবেশবান্ধব প্রকল্প হাতে নেওয়া জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
আনু মুহাম্মদ বলেন, শোনা যায় বর্তমান সরকার খুব কঠোর এবং অনমনীয়। কিন্তু পর্যালোচনা করে দেখা যায় যেখানে দুর্নীতি, প্রশ্নফাঁস, ব্যাংক ডাকাতি, রিজার্ভ চুরি হয় সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকার খুব নমনীয়। কিন্তু যেখানে জনগণের স্বার্থ জড়িত যেমন রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হয় সেখানে খুব কঠোর। এই বিপরীত নীতি অবলম্বন করলে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম আরও বাড়বে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ মানুষ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। বলা হয়, আমাদের দেশের পরিবেশ আইন খুব দুর্বল। কিন্ত সেই দুর্বল আইনের মধ্যেও পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ১৯৯৯ সালের ৩০ আগস্ট এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন এবং এর চারপাশে ১০ কিলোমিটার এলাকাকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এ প্রজ্ঞাপন অনুসারে সুন্দরবনের চারপাশে ১০ কিলোমিটার এলাকায় ভূমি, পানি, বায়ু ও শব্দ দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু সকল আইনকে দুই পা দিয়ে মাড়িয়ে কয়লাভিত্তিক ও পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সাংগঠনিক সমাবেশ, মিছিল, মিটিং চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনের নেতারা।
আজকের বাজার : আরএম/১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮