লক্ষ্মীপুর শহরের অলিগলিতে যাত্রী নিয়ে ঘুরে বেড়ান ফারুক হোসেন। কথা বলেন খুব গুছিয়ে। রং করা চুল, হাতে ঘড়ি, মাথায় ক্যাপ, চোখে সানগ্লাস, পায়ে পলিশ করা জুতো। এগুলো পড়ে রোজ কাজে বের হন। সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকুরে নন, নন কোনো কোম্পানির প্রতিনিধিও। তিনি একজন রিকশাচালক। নিজেকে ‘রিকশার ড্রাইভার’ বলতেই বেশি পছন্দ করেন ফারুক। পোশাক-পরিচ্ছদে পরিপাটি। কেতাদুরস্ত বলতে যা বোঝায় তাই-ই। রং মিলিয়ে বানানো শার্ট-প্যান্ট-টাই। বানানো আছে বেশ কয়েক সেট। একটা ময়লা হলে আরেকটা পরেন।
লক্ষ্মীপুর সদরের বাঞ্ছানগর এলাকার বাসিন্দা তিনি। বাবার নাম মো. শাহজাহান। লেখাপড়া তেমন না জানলেও কথা খুব গুছিয়ে বলেন ফারুক। কখনো কোনো যাত্রীর সঙ্গে বাজে আচরণ করেন না। ভদ্রলোক বলে প্রশংসিত। বললেন, তার এমন পরিপাটি চালচলন মুগ্ধ করে যাত্রীদের। বেশির ভাগ সময়ে খুশি হয়ে ভাড়া বেশি দেন তারা। এলাকার মানুষ তার রিকশায় করে ঘুরতে বের হন। শহরের কমপক্ষে ৫০০ লোকের কাছে তার ফোন নম্বর আছে। অনেক সময় যাত্রীরা অপেক্ষা করেন তার রিকশায় চড়তে। ছবি তোলেন, সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেন। বেশ নামডাক এখন ফারুকের। কেউ কেউ খুশি হয়ে ২০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকাও দেন। এলাকায় সে স্মার্ট রিকশাচালক নামে পরিচিত। অনেকে ডাকেন ডিজিটাল ফারুক নামে।
ফারুকের পথচলা
আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন ফারুক। দৈনিক ৩০০ টাকা আয় হতো। একসময় কাজ নেন খাবারের হোটেলে। তবে কোনো কিছুই সংসারের কষ্ট ঘোচাতে পারেনি। দুই বছর আগে ভাবতে শুরু করেন নতুন কিছু করার। একদম আনকোরা কিছু। শুরু করেন শার্ট-প্যান্ট পরে সেজেগুজে রিকশা চালানো। এখন প্রতিদিন তাঁর আয় প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। সংসারের কষ্টও অনেক কমেছে। ফারুক বলেন, নিয়ম করে প্রতিদিন রিকশা চালাই। সকাল নয়টায় বাসা থেকে বের হই। বেলা দেড়টার দিকে বাসায় চলে আসি। আবার তিনটার দিকে বের হয়ে রাত ১০-১১টায় বাসায় ফিরি।
আজকের বাজার: আরআার/ ০৭ আগস্ট ২০১৭