বাংলাদেশ ক্রিকেটে চন্দিকা হাথুরুসিংহের অধ্যায় শেষ। তার পরিকল্পনাও ভুলে গেছে বাংলাদেশ দল। সাবেক কোচকে নিয়ে ভাবার সুযোগই দেখছেন না মাশরাফি বিন মুর্তজা। ওয়ানডে অধিনায়ক তাকিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ জয়ের দিকে।
ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের প্রতিটি সংবাদ সম্মেলনেই হাথুরুসিংহেকে নিয়ে প্রশ্ন অবধারিত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন সাবেক কোচের প্রসঙ্গ উঠল আরও বেশি। হাথুরুসিংহের নতুন দলের সঙ্গে পুরোনো দলের লড়াই বলে কথা! তবে সাবেক কোচকে নিয়ে ভাবনায় খুব গভীরে যেতে চাইলেন না অধিনায়ক মাশরাফি।
“পেশাদার ক্রিকেটে এই ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম না। সম্প্রতি যে কোচ ছিল তার মুখোমুখি হওয়া এই প্রথম না। আর সত্যি বলতে, আমরা এটা অনেক আগেই পেছনে ফেলে এসেছি। যখন তিনি চলে গেছেন, তার পরিকল্পনা আমরা পুরোটাই ভুলে গেছি। এখন যারা কোচ, তাদের সাথে আমরা মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। এখানে তার ব্যাপারটা নিয়ে আর ভাবার সুযোগই নাই।”
অধিনায়ক দূরে রাখতে চাইলেও সাবেক কোচের প্রসঙ্গ ফিরে আসে ঘুরেফিরে। হাথুরুসিংহের দলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বাড়তি চাপ থাকাও অস্বাভাবিক নয়। অধিনায়ক যদিও দলকে সেই চাপের আঁচ লাগতে দিতে চান না।
“ভাবনায় থাকে, ম্যাচটা খেলতে হবে, জিততে হবে। এর বাইরে কোনো সুযোগই নাই চিন্তা করার। চিন্তা করলে আরও বেশি চাপ আসে। আমার কাছে মনে হয় খেলার দিকেই সবার মনোযোগ থাকে। সেটাই আছে। চাওয়া, আমরা যেন আরও ভালো খেলি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যেভাবে খেলেছি, সেভাবে খেলি। ওটাই সবাই ভাবছে।”
চমকপ্রদ কিছু করে হাথুরুসিংহেকে চমকে দেওয়ার কোনো ভাবনা দলের নেই। মাশরাফির চাওয়া, বাংলাদেশ খেলুক ভয়ডরহীন ক্রিকেট। অধিনায়ক সেটির উদাহরণ দিলেন গত ম্যাচ দিয়ে দলে ফেরা এনামুল হককে দিয়ে।
“আলাদা করে চমক দেওয়ার কিছু নেই। আমরা যেভাবে খেলতাম, সেভাবেই খেলব। হাথুরুসিংহে থাকতেও এখানে এসে বলতাম আমরা আত্মবিশ্বাস ও স্বাধীনতা নিয়ে ক্রিকেট খেলতে চাই। আপনি যদি দেখেন প্রায় তিন বছর আড়াই বছর পর বিজয় (এনামুল) দলে এসে সে যেভাবে ক্রিকেট খেলেছে, আমরা ঠিক এটাই চাই। ভয়হীন ক্রিকেট খেলুক।”
“অবশ্যই ওর জায়গা থেকে ওর রানটাকে বড় করার সুযোগ ছিল। তারপরও সে যেভাবে ব্যাটিং করেছে, আমরা তাকে শতভাগ সমর্থন করব। আমরা দল থেকে যেটা চাই সেভাবেই সে খেলেছে। বোঝাতে চাচ্ছি যে, এসবই দলকে বড় ম্যাচ বা ভালো ম্যাচ জিততে সহযোগিতা করবে। মাঠের বাইরে থেকে অনেক চিন্তা করে যাওয়ার দরকার নেই।”
অধিনায়ক দলকে নির্ভার রাখার চেষ্টা করছেন বটে। তবে এটিই বাস্তবতা যে, প্রতিপক্ষ শিবিরে হাথুরুসিংহে থাকা মানে চ্যালেঞ্জটাও বেশি। বাংলাদেশ দলের নাড়ি-নক্ষত্র তার জানা। চ্যালেঞ্জটি স্বীকার করছেন অধিনায়ক, তবে আলাদা খুব বেশি পাত্তা দিতে চাইলেন না।
“চ্যালেঞ্জ আসলে সব জায়গাতেই থাকে। হাথুরুসিংহে যখন এখানে ছিল, তখন তার ওপরে এক রকম চ্যালেঞ্জ ছিল। হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকায় আমরা পুরোটা হেরে আসার পর চ্যালেঞ্জটা আরও বেশি হতো। আরও উপভোগ্য হতো। তিনি থাকেননি, শ্রীলঙ্কাকে বেছে নিয়েছেন। এখন তার আরেক রকম চ্যালেঞ্জ।”
“আমাদেরও চ্যালেঞ্জ, যখন ছিল কথা তো সব আমরাই শুনেছি। চ্যালেঞ্জ তো সব সময় আমাদেরকেই নিতে হয়। এই চ্যালেঞ্জটা থাকছে, এখনও যে নাই তা না। আর আমরা এই টুর্নামেন্টটা যদি জিতিও পরের সিরিজে তো একই চাপ থাকবে। প্রত্যাশাও তৈরি হয়। বাংলাদেশের হয়ে খেললে এই চ্যালেঞ্জ থাকবেই। নতুন কিছু নয়।”
আজকের বাজার: সালি / ১৮ জানুয়ারি ২০১৮