হানিফ সাহেবের বক্তব্যে কী প্রমাণ হলো, প্রশ্ন রিজভীর

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের বক্তব্যে প্রমাণ হলো তারা সদলবলে ভারতে গিয়েছিলেন ক্ষমতায় টিকে থাকতে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, হানিফ সাহেবের বক্তব্যে কী প্রমাণ হলো আপনারা সদলবলে ভারতে গিয়েছিলেন কী ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেনদরবার করতে? বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার জেনে গেছে যে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ২০/২২টির বেশি আসন পাবে না। তাই একতরফা নির্বাচনের পক্ষে নাক গলাতে তারা দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, দেশকে গণতন্ত্রহীন করে আওয়ামী সরকার সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে গোটা দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে। হানিফ সাহেবের বক্তব্যে জাতির সামনে ভয়ঙ্কর তথ্য বেরিয়ে আসলো, গণতন্ত্র বিধ্বংসী আওয়ামী লীগের পকিল্পনার বহিঃপ্রকাশ ঘটলো। কিন্তু জনগণ এবার আর বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না।

উল্লেখ, গত বুধবার দুপুরে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে কাজী বশির মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে হানিফ বলেন,  জননেত্রী শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত আছেন, যতদিন কর্মক্ষম আছেন, ততদিন পর্যন্ত তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। জননেত্রী শেখ হাসিনাই ততদিন বাংলার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন।

এর জবাবে রিজভী বলেন,  আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের এই বক্তব্য স্বীকৃত স্বৈরাচারী সরকারেরই যথার্থ প্রতিধ্বনি। তার এই বক্তব্য গণতন্ত্রকে চিরদিনের জন্য নির্বাসনে পাঠিয়ে বাকশাল পুরোদমে চালু রাখার ইঙ্গিতবাহী। তারা যে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে চায়, তার বক্তব্য সেটিরই বহি:প্রকাশ।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিভাবে দিল্লিতে নির্বাসিত জীবন কাটিয়েছিলেন? রাজনৈতিক আশ্রয়ে কিভাবে ছিলেন? তার ছোট বোন শেখ রেহানা কিভাবে ব্রিটেনে অবস্থান করেছিলেন? জাতির সামনে এর জবাব দেয়ার আহ্বান জানান রিজভী।

রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে সরকারি ষড়যন্ত্রের যেন শেষ নেই। তারেক রহমানকে নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বক্তব্যে সাধারণ মানুষের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে। সমালোচনার মুখে তিনি তার ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া সকল ডকুমেন্টস সরিয়ে নিয়ে এখন বলছেন, তার ফেসবুক হ্যাকড হয়েছে। মূলত প্রশ্নবিদ্ধ কাগজপত্র উপস্থাপন করে তিনি সবার কাছে হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছেন।

তিনি বলেন, তারেক রহমান ব্রিটেনের আইন মোতাবেক সেখানে বসবাস করছেন যা দলের পক্ষ থেকে বার বার উপস্থাপন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে নানাভাবে ষড়যন্ত্র ও তদ্বির করে ব্যর্থ হয়ে তার কেবিনেটের প্রতিমন্ত্রীকে দিয়ে জাতির সামনে প্রশ্নবিদ্ধ কাগজপত্র উপস্থাপন করাচ্ছেন। দেশের মানুষের সমালোচনা ও প্রত্যাখানের মুখে শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুক থেকে উপস্থাপিত কাগজপত্র সরিয়ে ফেলেছেন।

তিনি বলেন, বিনা ভোটের সরকারকে সবসময় জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েই চলতে হয়। আমি পরিষ্কার ভাষায় আবারো বলতে চাই- তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেননি। যুক্তরাজ্যের অভিবাসন আইনে শত শত দেশের নাগরিকরা যেভাবে পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম নিয়ে অবস্থান করেন সেভাবেই তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। তিনি যুক্তরাজ্যের হোম ডিপার্টমেন্টে পলিটিক্যাল এসাইমেন্টের জন্য তার পাসপোর্টটি জমা দিয়েছেন, সারেন্ডার করেননি।

অভিযোগ করে রিজভী বলেন, দেশজুড়ে বেকারত্ব, রাজনৈতিক মতপ্রকাশে স্বাধীনতাহরণ, লুটপাট ও দমননীতির বেপরোয়া উত্থানকে আরো দীর্ঘায়িত করা। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বেআইনী কারাবাসে আটকে রেখে তাকে যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে তার অসুস্থতা তীব্র থেকে তীব্রতর করার এক ভয়ঙ্কর মাস্টারপ্ল্যানের যে অংশ, তা হানিফ সাহেবের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে।

 

আজকেরবাজার/এস