হারের বৃত্ত থেকে বের হলো রংপুর রাইডার্স। টানা তিন হারের পর সোমবার সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে সাত রানের জয় তুলে নিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল রংপুর রাইডার্স। পাঁচ ম্যাচ খেলে রংপুর রাইডার্সের এটি দ্বিতীয় জয়। পয়েন্ট টেবিলে এখন তারা অবস্থান করছে পাঁচ নম্বরে। আট ম্যাচ খেলে সিলেট সিক্সার্সের এটি চতুর্থ হার। সাত পয়েন্ট নিয়ে তারা পয়েন্ট টেবিলে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে রংপুর রাইডার্সের দেয়া ১৭০ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে ১৬২ রান সংগ্রহ করে সিলেট সিক্সার্স। দলের পক্ষে সাব্বির রহমান ৭০ ও নাসির হোসেন ৫০ রান করেন। রংপুর রাইডার্সের পক্ষে মাশরাফি বিন মুর্তজা ১টি, সোহাগ গাজী ১টি, রুবেল হোসেন ১টি ও থিসারা পেরেরা ১টি করে উইকেট নেন।
সিলেট সিক্সার্স ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ২৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে। এরপর নাসির হোসেন ও সাব্বির রহমান ১১৭ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ২৪ বলে প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান। হাতে ৭ উইকেট। উইকেটে থিতু দুই ব্যাটসম্যান, গড়েছেন শতরানের জুটি। এই সময় বোলিংয়ে এসে মাশরাফি বিন মুর্তজা ওভারে দিলেন মাত্র ২ রান। ঘুরে গেল ম্যাচের মোড়। সেই ঘাটতি ঘুচিয়ে আর ফিরতে পারেনি সিলেট সিক্সার্স। রংপুর রাইডার্স জিতেছে ৭ রানে।
৫ ছক্কায় ৩৯ বলে ৫০ রানের ইনিংসে ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছেন ক্রিস গেইল। ম্যাচ শেষে বললেন, মাশরাফির ওভারটিই ঘুরিয়ে দিয়েছে ম্যাচের মোড়। ওই ওভারে শেষেই ওভারপ্রতি ৯ রানের কম থেকে প্রয়োজনীয় রান রেট বেড়ে দাঁড়ায় ওভার প্রতি ১১! পরের তিন ওভারে ভালো বোলিং করে কাজটা শেষ করেন থিসারা পেরেরা ও রুবেল হোসেন। জয়ের দুয়ার থেকে হেরে বসে সিলেট।
“ওই ওভারই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বলতেই হবে, নাসির ও সাব্বির দারুণ ব্যাট করেছে। দলকে জয়ের অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিল। ওদেকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর ওরা ভালোভাবে দলকে টেনেছে।” “তবে আমাদের বোলাররা শেষ দিকে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরেছে। অধিনায়কের এক ওভারে মাত্র ২ রান দেওয়া ছিল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এরপর রুবেল ও থিসারা দারুণভাবে শেষ করেছে।”
আগের চার ম্যাচে মাত্র একটি জিতে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে ছিল রংপুর। এই ম্যাচের জয়টি তাই খুব করে চাইছিল দল, জানালেন গেইল।
“আজকের মাচটি আমাদের জন্য ভীষণ চাপের ম্যাচ ছিল। সব ম্যাচই চাপের, তবে আজকের জয়ের পথে ফিরতে এই ৩ পয়েন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কালকেও খুব কঠিন আরেকটি ম্যাচ অপেক্ষায়। ছেলেদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে আজকের জয় গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”
দলীয় ১৪২ রানে থিসারা পেরেরার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানার কাছে ম্যাককলামের হাতে ক্যাচ হন সাব্বির রহমান। ৪৯ বল খেলে ৭০ রান করেন তিনি। এই রান করার পথে সাতটি চার ও দুইটি ছক্কা হাঁকান সাব্বির রহমান। ইনিংস শেষে নাসির হোসেন ৪৩ বল খেলে ৫০ রান করে ও টিম ব্রেসনান ৯ বল খেলে ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান সংগ্রহ করে রংপুর রাইডার্স। দলের পক্ষে ক্রিস গেইল ৫০, ম্যাককলাম ৩৩, মোহাম্মদ মিথুন ২৫ ও রবি বোপারা ২৮ রান করেন। সিলেট সিক্সার্সের পক্ষে নাসির হোসেন ১টি, টিম ব্রেসনান ১টি, লিয়াম প্লানকেট ১টি ও আবুল হাসান ২টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: সাত রানে জয়ী রংপুর রাইডার্স।
রংপুর রাইডার্স ইনিংস: ১৬৯/৭ (২০ ওভার)
(ব্রেন্ডন ম্যাককলাম ৩৩, ক্রিস গেইল ৫০, মোহাম্মদ মিথুন ২৫, শাহরিয়ার নাফিস ৮, থিসারা পেরেরা ১৫, রবি বোপারা ২৮, জিয়াউর রহমান ১*, মাশরাফি বিন মুর্তজা ৩, সোহাগ গাজী ০*; নাসির হোসেন ১/২৭, শুভাগত হোম ০/১২, দানুশকা গুনাথিলাকা ০/২৪, টিম ব্রেসনান ১/২৩, লিয়াম প্লানকেট ১/৪৯, আবুল হাসান ২/২৪, তাইজুল ইসলাম ০/৮)।
সিলেট সিক্সার্স ইনিংস: ১৬২/৪ (২০ ওভার)
(দানুশকা গুনাথিলাকা ৮, আন্দ্রে ফ্লেচার ১২, বাবর আজম ২, নাসির হোসেন ৫০*, সাব্বির রহমান ৭০*, টিম ব্রেসনান ১২*; মাশরাফি বিন মুর্তজা ১/১৮, সোহাগ গাজী ১/৬, রুবেল হোসেন ১/৩০, জহির খান ০/২৯, রবি বোপারা ০/২১, থিসারা পেরেরা ১/৪৩, জিয়াউর রহমান ০/১০)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: ক্রিস গেইল (রংপুর রাইডার্স)।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২১ নভেম্বর ২০১৭