হোপের সেঞ্চুরি ম্লান করে প্যাটেলের বিধ্বংসী ইনিংসে জিতলো ভারত

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার শাই হোপের সেঞ্চুরি ম্লান করে ভারতকে দুর্দান্ত জয় উপহার দিলেন লোয়ার-অর্ডার ব্যাটার অক্ষর প্যাটেল। প্যাটেলের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ভারত ২ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
এই জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো ভারত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা ১২তম ওয়ানডে সিরিজ জয়ে বিশ^ রেকর্ড গড়লো ভারত। বিশ^ ক্রিকেটে একটি দেশের বিপক্ষে টানা সিরিজ জয়ের রেকর্ডে চিরপ্রতিন্দ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে পেছনে ফেললো ভারত। পাকিস্তান জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১১টি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিলো।
গতরাতে পোর্ট অব স্পেনে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার কাইল মায়ার্সের মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৯ ওভারেই ৬৫ রান তুলে ফেলে ক্যারিবীয়রা। দশম ওভারের প্রথম বলে মায়ার্সকে ফিরিয়ে ভারতের প্রথম সাফল্য এনে দেন স্পিনার দীপক হুদা। ২৩ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৯ রান করেন মায়ার্স।
মায়ার্স ফেরার পর ক্রিজে আরেক ওপেনার হোপের সঙ্গী হন শামারাহ ব্রুকস। এই জুটি থেকে ৭৪ বলে ৬২ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে ২১ ওভার শেষে ভালো অবস্থায় ছিলো ক্যারিবীয়রা। কিন্তু ২১ ও ২২তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই উইকেটের পতন ঘটিয়ে ম্যাচে ফেরার পথ তৈরি করেছিলো ভারত। ব্রুকসকে ৩৫ রানে প্যাটেল এবং চার নম্বরে নামা ব্রান্ডন কিংকে খালি হাতে বিদায় দেন স্পিনার যুজবেন্দ্রা চাহাল। ১৩০ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের পালে রানের হাওয়া দিয়েছেন হোপ ও অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। দু’জনে সেঞ্চুরির জুটি গড়েন। ১২৬ বল খেলে ১১৭ তুলেন তারা। জুটিতে ৭৭ বলে ৭৪ রান করে আউট হন পুরান। তার ইনিংসে ১টি চার ও ৬টি ছক্কা ছিলো।
৪৪তম ওভারে পুরান যখন ফিরেন তখন ৯৩ রানে ছিলেন হোপ। চাহালের পরের ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে শততম ওয়ানডে ম্যাচে ১৩তম সেঞ্চুরির দেখা পান হোপ। ১২৫ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি। বিশে^র দশম ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে শততম ম্যাচে সেঞ্চুরি দেখা পেলেন হোপ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৩’শতে রেখে ৪৯তম ওভারে আউট হন হোপ। ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৩৫ বলে ১১৫ রান করেন হোপ। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩১১ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতের শারদুল ঠাকুর ৫৪ রানে ৩ উইকেট নেন।
৩১২ রানের বড় টার্গেটে ভালো শুরু হলেও ১১তম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ১৩ রান করে আউট অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান। ইনিংসের শুরুতে ভারতের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন আরেক ওপেনার শুভমান গিল। কিন্তু ব্যক্তিগত ৪৩ রানে থামতে হয় তাকে। চার নম্বরে নেমে ৯ রানের বেশি করতে পারেননি সূর্যকুমার যাদব। এতে ৭৯ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। চতুর্থ উইকেটে ৯৪ বলে ৯৯ রানের জুটি গড়ে ভারতকে খেলায় ফেরান সঞ্জু স্যামসন ও শ্রেয়াস আইয়ার। তবে দলীয় ২০৫ রানের মধ্যে বিদায় নেন দু’জনই। আইয়ার ৭১ বলে ৬৩ ও স্যামসন ৫১ বলে ৫৪ রান করেন।
শেষ ১০ ওভারে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ১০০ রান দরকার ছিলো ভারতের। ষষ্ঠ উইকেটের প্যাটেলের মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৩৩ বলে ৫১ রান পায় টিম ইন্ডিয়া। দলীয় ২৫৬ রানে হুদা থামলে, ধাক্কা খায় ভারত। তবে হাল ছাড়েননি প্যাটেল। হুদা ৩৩ রান করেন। লোয়ার-অর্ডার ব্যাটারদের সাথে ঝড়ো গতিতে রান তুলেছেন প্যাটেল। মাত্র ২৫ বলে ৪০ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান প্যাটেল। সপ্তম উইকেটে শারদুলকে নিয়ে ১২ বলে ২৪ ও অষ্টম উইকেটে আভাস খানকে নিয়ে ১৯ বলে ২৪ রান তুলেন প্যাটেল। তাতে শেষ ওভারে জয়ের জন্য মাত্র ৮ রানের প্রয়োজন পড়ে ভারতের। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে ভারতকে দারুন এক জয় উপহার দেন প্যাটেল। ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৩৫ বলে অপরাজিত ৬৪ রান করেন প্যাটেল। ম্যাচ সেরাও হয়েছেন প্যাটেল।
একই ভেন্যুতে ২৭ জুলাই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে।