চলতি অর্থ বছরের জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটাতে ১৪ লাখ টন ক্রুড অয়েল বা অপরিশোধিত তেল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সৌদি আরব ও আবুধাবি থেকে সরকারি পর্যায়ে এ তেল আমদানি করা হবে। এজন্য ব্যয় হবে চার হাজার ৯০১ কোটি ৬ লাখ টাকা।
বুধবার ২৭ ডিসেম্বর সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি প্রস্তাবণা অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের কাছে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্নদিক তুলে ধরেন।
তিনি জানান, বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য বিভিন্ন প্রকার জলযান নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় ২ টি টাগ বোর্ড ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ৫ হাজার ১৪১ কোটি ২০ লাখ টাকা। নৌবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন খুলনা শীপ ইয়ার্ড টাগ বোট দুইটি সরবরাহ করবে।
এছাড়া ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া সেকশন পুনর্বাসন এবং কশিয়ানী-গোপালঞ্জ-টুঙ্গীপাড়া নতুন রেলপথ নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় ১৮০ মিটার লম্বা একটি সেতু নির্মাণ কাজের জন্য টার্নকি ভিত্তিতে বিভিন্ন মারামাল ও শ্রমিক সরবরাহের জন্য চুক্তির অতিরিক্ত কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দরপত্রে ব্যয় ৭৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ধরা হলেও ৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকার কাজ বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ৭৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
বৈঠকে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের ই-জিপি সিস্টেম পরিচালনা ও বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটালাইজিং ইম্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (ডিআইএমএপিপি) প্রকল্পের আওতায় ‘অপারেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অব ই-জিপি সিস্টেম ইন বাংলাদেশ’বিষয়ক পরামর্শক সেবা সংক্রান্ত ক্রয় চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ‘রূপকল্প-৩’ প্রকল্পে আওতায় ‘কসবা #১’ এর কূপ খনন এলাকায় একটি গভীর নলকূপ, পাম্প হাউজ ও পাইপ লাইন নেটওয়ার্ক, ক্যারাভান ফাউন্ডেশেন, মাস্টার ড্রেন, প্যালাসাইডিং, অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মানসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজ সম্পাদনের জন্য সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ প্রদানের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এত ব্যয় হবে ৬০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
একই মন্ত্রণালয়ের ‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০’ এর আওতায় রূপকল্প-৫ প্রকল্পের অধীন বেগমগঞ্জ#৩ ওয়ার্কওভার কূপের প্রকিউরমেন্ট অব ড্রিল স্টিম টেস্টিং (ডিএসটি) এর সেবা গ্রহণের জন্য সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ দেওয়ার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৭৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা।
এছাড়া সারের মজুদ বাড়াতে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এক লাখ টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরমধ্যে ব্যাগড প্রিল্ড ইউরিয়া সার ২৫ হাজার টন এবং ব্যাগড গ্রানুলার সার রয়েছে ৭৫ হাজার টন।
এর আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আজকের বাজার : এলকে ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭