আদালতের স্থগিতাদেশ উঠে যাওয়ার পর আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মুজিবনগর দিবস পালন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে শনিবার (১৫ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আদালতে রিট হওয়ার কারণে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আদালত আদেশ দিয়েছিলেন, আমাদের জবাব পাওয়ার পর আদালত সন্তুষ্ট হয়েছেন, যে এটা বন্ধ থাকা সঠিক নয়। এজন্য তারা তাদের স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছেন।’
গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১৫ কার্যদিবস সময় দিয়েছি, বলেছি এ সমযের মধ্যে শেষ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাম এখনকারটি আমরা সঠিক দাবি করি না। বেঠিকও থাকতে পারে। যে যাচাই-বাছাই চলছে তা আমার অনলাইনে দিয়ে দিয়েছি। যে কোন লোক যেন দেখতে পারে।’
‘যাচাই-বাছাইয়ের পর যেগুলো টিকবে, যারা বাদ যাবেন তাদের অনলাইন থেকে আদ দিয়ে দেওয়া হবে বা নতুনদের সংযোজিত করে তা আবার অনলাইনে প্রকাশ করা হবে।’
তালিকার বিষয়ে যে কেউ আপত্তি জানাতে পারবে
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা এক মাস সময় দেব। সারা জাতির কাছে আমাদের আপিল থাকবে কেউ যদি মনে করেন যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে পক্ষপাতিত্ব হয়েছে, যদি কেউ দলীয় প্রশ্ন তুলতে চান বা কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকে তবে এক মাসের মধ্যে করতে পারবেন। শুনানির মাধ্যমে এ বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।’
‘মানুষ একটা জিনিসভাবে, অতীতেও হয়ে আসছে। যেহেতু দলীয় সরকার দেশ চালায় তাই দলীয় ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই হতে পারে। এ ধরণের আশঙ্কা যাতে না থাকে সেজন্য আমরা সেগুলো প্রকা্শ করব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘একেবারে স্থায়ীভাবে, এ জিনিসটি যাতে আর কখন বিতর্কিত না হয় সেজন্য সব ধরণের সতর্কতা অবলম্বন করে এ তালিকাটা আমরা প্রস্তুত করতে চাই। আমার স্থায়ীভাবে বিতর্কের অবসান ঘটাতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় এখন যে সব দল আছে যেমন- জাসদ, বাসদ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি এগুলো ছিল না। তারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আমরা তালিকা করছি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার কি ভূমিকা ছিল তার ভিত্তিতে। আজকে কার কী ভূমিকা সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। আজকে তিনি কি করেন এটা মোটেও বিবেচনায় আনতে রাজি নই।’
গত ১২ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মহানগর, জেলা ও উপজেলায় কমিটি করতে নির্দেশনা দেয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৩ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এ ছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে হাইকোর্টের আদেশে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় এই বাছাই কার্যক্রম স্থগিত হয়।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সচিব মোহাম্মদ মাহমুদ রেজা খান উপস্থিত ছিলেন।