২লাল কার্ড,৮ গোলের নাটকীয় চেলসি-আয়াক্স ম্যাচ

নিজের তরুণ দলের এমন প্রত্যাবর্তন কল্পনা করতে পেরেছিলেন ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড? এক মিনিটে দুই লাল কার্ড দেখে আয়াক্স দল হয়ে গেছে নয় জনের, কোচ এরিক টেন হাগেরই বা কী করার ছিল তখন? এমন রাতের জন্য নাটক বোধ হয় তৈরিই চ্যাম্পিয়নস লিগে, মাঠে শুধু মঞ্চায়ন হয় রোমাঞ্চের। দ্বিতীয়ার্ধে একটা সময় ৪-১ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আয়াক্স। ৬৩ মিনিটে যখন সিজার আজপিলিকুয়েতা এক গোল শোধ করেছেন তখনও অনেক কাজ বাকি চেলসির। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে এর পর ম্যাচ নিয়েছে নাটকীয় মোড়। চেলসির এক আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে আয়াক্সের দুইজন দেখেছেন লাল কার্ড। সেখান থেকেই পেনাল্টিও পেয়েছিল চেলসি। ৯ জনের আয়াক্সের বিপক্ষে এর পর তিন মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল দিয়ে পিছিয়ে থাকা ম্যাচে দারুণভাবে ফিরে এসেছে চেলসি। আত্মঘাতী গোল, দুর্দান্ত গোল, লাল কার্ড আর রেফারি-ভিএআরের বিতর্কিত সব সিদ্ধান্তের ম্যাচে শেষ পর্যন্ত দুইদল ড্র করেছে ৪-৪ গোলে।

এক মিনিটের ভেতর সব ওলট-পালট হয়ে গেছে আয়াক্সের, আর চেলসি তাতে ম্যাচে ফেরার আলো খুঁজে পেয়েছে। চেলসির এক আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে প্রথমে আব্রাহামকে ফাউল করলেন ব্লিন্ড, রেফারি খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এর পরও। পরে ওই আক্রমণ থেকেই বক্সের বাইরে থেকে শট করেছিলেন হজসন ওদয়। তার শট গিয়ে লাগল ভোল্টম্যানের হাতে। সবকিছু ঘটেছে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে। ইতালিয়ান রেফারি জিয়ানলুকা রক্কি এক বাঁশিতে খেলা থামিয়ে প্রথমে ব্লিন্ডকে দেখিয়েছেন দ্বিতীয় হলুদ কার্ড, চেলসিকে দিয়েছেন পেনাল্টি। পরে ভোল্টম্যানকেও দেখিয়েছেন দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। আয়াক্স তখনও এগিয়ে ৪-২ এ, কিন্তু সেটা নয় জনের আয়াক্স।

রেফারির সঙ্গে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে নাকি হ্যান্ড বলের জন্য ভোল্টম্যান লাল কার্ড দেখেছেন সেই কারণ অবশ্য জানা যায়নি। সেটা জানার চেষ্টা করেননি ডাগ আউটে থাকা টেন হাগও। পেনাল্টি থেকে জর্জিনিয়ো যখন ব্যবধান ৪-৩ করেছেন, ততোক্ষণে টেন হাগ জেনে গেছেন এই ম্যাচে ড্র পাওয়াও কঠিন হয়ে যাবে তার দলের। এর পরই আক্রমণের দুইজনকে উঠিয়ে একজন মিডফিল্ডার ও ডিফেন্ডার নামিয়েছিলেন আয়াক্স কোচ। তবে সেটাও যথেষ্ট হয়নি। তারা নামার এক মিনিট পরই আয়াক্সের দুঃস্বপ্ন সত্যি করে স্কোরলাইন ৪-৪ করে ফেলে চেলসি। কর্নার থেকে প্রথমে সতীর্থের হেড আয়াক্সের বারপোস্টে লেগে ফিরে আসার পর বদলি রিসি জেমস বল পেয়েছিলেন বক্সের ভেতর। ডান পায়ের দারুণ শট নিয়ে ১৯ বছর বয়সী তখন হয়ে গেছেন চেলসির চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসের তরুণতম গোলদাতা।

রোমাঞ্চ অবশ্য সেখানেও শেষ হয়নি, ম্যাচের তখনও ১৬ মিনিটে। নয় জনের আয়াক্সের বিপক্ষে এর পর চেলসির জয়টা সময়ের ব্যাপারই মনে হচ্ছিল। ৭৮ মিনিটে আরও একবার গোল করে সেই কাজটাই করে ফেলেছিলেন আজপিলিকুয়েতা। কিন্তু স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের বাধভাঙ্গা উল্লাস বেরসিকের মতো থামিয়ে দিয়েছে ভিএআর। আজপিলিকুয়েতার শট আয়াক্সের গোলে ঢোকার আগে ছুঁয়ে গেছে আব্রাহামের হাত। ভিএআর সে দফায় দিয়েছে সঠিক সিদ্ধান্তই। শেষ পযর্ন্ত দুইদল ম্যাচ ড্র করে।