বাংলাদেশে এখন জীবন রক্ষাকারী নানা ওষুধ তৈরি হচ্ছে। দেশের ভেতরের চাহিদা মিটিয়ে তা রপ্তানি হচ্ছে বিদেশের বাজারেও। দেশের অর্থনীতিতে এই খাতের যে অবদান তারই স্বীকৃতি হিসেবে সোমবার থেকে শুরু হওয়া ‘২০১৮ সালের পণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে ওষুধ শিল্পের পণ্যকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমাবার ১ জানুয়ারি মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৮ এর উদ্বোধনের সময় ওষুধ শিল্পের পণ্যকে ‘প্রোডাক্ট অব দ্যা ইয়ার’ হিসেবে ঘোষণা দেন। বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে প্রতি বছরের মতো এবারও এই মেলার আয়েজন করেছে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রপ্তানি আয়ে ওষুধ বিশেষ ভূমিকা রাখছে। আশা করি আগামীতে এই খাত থেকে আয় আরও বাড়বে। ওষুধ শিল্পের আরও বিকাশ ও মান বাড়ানোর লক্ষ্যে এই খাতের পণ্যকে ‘প্রোডাক্ট অব দ্যা ইয়ার’ হিসেবে ঘোষণা করছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই, আমরা কারো কাছে হাত পেতে চলবো না। পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের ওপর যখন দুর্নীতির দোষ দেওয়া হলো। আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম এটাতে কোনো দুর্নীতি হয়নি। আমরা দেশ গড়তে এসেছি, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়টুকু সম্পূর্ণ কাজে লাগাতে চাই। দুর্নীতি করতে বা নিজের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় আসিনি। দেশের প্রতিটি মানুষ বা নাগরিক যাতে মাথা উঁচু করে চলতে পারে সে জন্য কাজ করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি। নতুন শিল্প কলকারখানা গড়ে তুলতে মেশিনারিজ আমদানিতে ট্যাক্স কমিয়েছিলাম। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি। যাতে দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে ওঠে। বিনিয়োগ বাড়াতে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যেখানে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ওয়ানস্টপ সার্ভিস দেওয়া হয়। বাজেটের আকার বাড়ানো হয়েছে। আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ শতাংশ ও আমদানির ৭৫ শতাংশ নিজস্ব অর্থায়নে করি। এখন আর কারো কাছে হাত পাততে হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার রোল মডেল। বাংলাদেশ এখন তাদের কাছে বিস্ময়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আমরা ৩৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে পেরেছি। তবে রপ্তানি আরো বাড়াতে আমাদের নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করতে হবে। বিশ্বের কোন দেশে কোনো পণ্যের চাহিদা আছে তা খুঁজে বের করতে হবে। এরপর পণ্যের মান নিশ্চিত করত হবে।
এবারের বাণিজ্যমেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৫৮৯ স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকছে। মেলায় ১৭ দেশের ৪৩ প্রতিষ্ঠানের স্টল বা প্যাভিলিয়ন থাকছে। দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য থাকছে দুটি শিশুপার্ক, সুন্দরবনের আদলে একটি ইকোপার্ক।
মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেপাল, হংকং, জাপান, আরব আমিরাত, মরিশাস, ঘানা, মরক্কো ও ভুটান। অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করছে।
নিরাপত্তায় মেলায় পুলিশ ও র্যা বের ওয়াচ টাওয়ারসহ আনসার ও ভিডিপি, পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, বিজিবি এবং র্যা ব সদস্যরা মোতায়েন থাকছে। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
বাণিজ্য মেলায় কোনো সাপ্তাহিক ছুটি নেই। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। প্রবেশ ফি প্রতিজন ৩০ টাকা। ছোটদের জন্য ২০ টাকা।
আজকের বাজার: এলকে/ ১ জানুয়ারি ২০১৮