৩০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি সম্ভব;দাবি ব্যবসায়ীদের

পবিত্র রমজান মাসে রাজধানীবাসীর জন্য গরুর মাংসের দাম ৪৭৫ টাকা এবং খাসির মাংস ৭২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এক টেবিলে বসে এই দর ঠিক করা হলেও তা মানছে না ব্যবসায়ীরা। এখনও বাজারে মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গাবতলীর গুরুর হাটের ইজারা সমস্যার সমাধান না হলে মাংসের দাম কমানো সম্ভব না।

তাদের দাবি, গাবতলী হাটের ইজারাদার, হুন্ডি ব্যবসায়ীরা বেশি টাকা আদায় করছে। দেশের সাধারণ মানুষকে এর মাসুল দিতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব সমস্যার সমাধান করলে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৩০০-৩৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৫০০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব।

সবার সম্মতিক্রমে সম্প্রতি গরু ও খাসির মাংসের দাম নির্ধারণ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। তবে রমজান শুরু হলেও এখন পর্যন্ত রাজধানীর অধিকাংশ বাজারে ওই দামের কার্যকরিতা দেখা যায়নি।

রমজানের চতুর্থ দিন আজ বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, পলাশী বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, নির্ধারিত ৪৭৫ টাকা দরে কোনও বাজারে গরুর মাংস হচ্ছে না। বরং তার চেয়ে বেড়েছে ১০০ টাকা থেকে ১২৫ টাকা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, হাড় ছাড়া গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ দরে বিক্রি হচ্ছে। হাড়সহ ৫০০ টাকা থেকে ৫৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে।

মাংস ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত ওই দামে মাংস বিক্রি করবেন না বলে জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ওই দামে মাংস বিক্রি করতে হলে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হবে।

কারওয়ান বাজারে গরুর মাংসের ব্যবসায়ী সাব্বির হোসাইন রিয়াদ খান বলেন, নির্ধারিত ওই দামে কোনোভাবেই মাংস বিক্রি করতে পারবো না। ওই দামে বিক্রি করতে হলে মাংসের পাশাপাশি রেস্টুরেন্টের ব্যবসা শুরু করতে হবে। নিজের মাংস নিজের রেস্টুরেন্ট। তাহলে আর সমস্যা হবে না।

হাতিরপুল বাজারের ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া বলেন, সরকার নির্ধারণ করে দিলেও ওই দামে আমরা বিক্রি করতে পারবো না। কারণ গরু কিনতে গিয়ে আমাদের খরচ হচ্ছে বেশি। বেশি টাকায় গুরু কিনে কম টাকায় মাংস বিক্রি করলে তো ব্যবসা এমনিকেই গুটিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, গরু কিনতে গিয়ে ইজারা বেশি গুণতে হচ্ছে। ফলে ওই টাকার ঘাটতি মেটাতে মাংসের দামও বাড়াতে হচ্ছে। ইজারা সমস্যার সমাধান হলে মাংসের দাম কমবে।

এসব বিষয়ে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, গাবতলী হাটের ইজারাদার, হুন্ডি ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করছে। দেশের সাধারণ মানুষকে এর মাসুল দিতে হচ্ছে। এখন ভোক্তাদের থেকে অতিরিক্ত দাম নিয়ে সেই অর্থ ইজারাদার, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের দিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, আদালতের আদেশ, সিটি কর্পোরেশনের শর্ত কোনো কিছুর তোয়াক্কা করে না গাবতলী গরুর হাটের ইজারাদাররা। মাংস ব্যবসায়ীদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিচারের নামে চাঁদাবাজি করছে ইজারাদারদের নিযুক্ত বাহিনী। রাত ১২টার আগে হাট থেকে গরু বের হতে দিচ্ছে না তারা। রবিউল আলম বলেন, এসব সমস্যার সমাধান করলে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৩০০ টাকা এবং খাসির মাংসের দাম ৫০০ টাকা করা সম্ভব হবে।

সূত্র:অর্থসূচক

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/৩১ মে ২০১৭