দেশের তিন জেলা বগুড়া, শেরপুর ও যশোরে এক রাতেই বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহতের খবর জানিয়েছে পুলিশ।
এরমধ্যে বগুড়ার শেরপুরে সন্ত্রাসীদের দুপক্ষের বন্দুকযুদ্ধে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। বাকি দুজন যশোর ও শেরপুর জেলায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর বাজারের দক্ষিণ পাশের গোপীনপুর সেতু এলাকায় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিহতরা হলেন- গাইবান্ধা জেলা সদরের কাঁচদহ গ্রামের মন্টু সরকারের ছেলে ধনেশ সরকার ওরফে সুকুমার সরকার (৩৮) ও নাটোর জেলার সিংড়া থানার বামিহাল গ্রামের রজব আলীর ছেলে আফজাল হোসেন (৫৫)।
পুলিশ জানায়, নিহত ধনেশের নামে বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা ও আফজালের নামে ২০টি মামলা রয়েছে।
বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর ভাষ্য, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সন্ত্রাসীদের দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে তিনিসহ শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান ও শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে টহল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পান। পরে তাদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত দুজন আহত থাকা অবস্থায় পুলিশের কাছে নিজেদের পরিচয় জানিয়েছে দাবি করে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শ্যুটার গান, একটি পাইপগান ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে যশোর সদর উপজেলার মাহিদিয়া এলাকার কাবুলের ইট ভাটা এলাকায় বুধবার ভোররাতে বন্দুকযুদ্ধে শিশির ঘোষ (৩০) নামে এক যুবক নিহত হন।
যশোর শহরের ষষ্ঠীতলা এলাকার নিত্য ঘোষের ছেলে শিশিরকে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী দাবি করে পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, ডাকাতিসহ ১৭টি মামলা রয়েছে।
যশোর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামানের ভাষ্য, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে শংকরপুর মুরগির ফার্ম এলাকা থেকে শিশিরকে চারটি ককটেলসহ গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে আরও অস্ত্র ও বোমা থাকার কথা স্বীকার করলে বুধবার ভোররাতে তাকে নিয়ে অভিযানে বের হয় পুলিশ। ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে সদর উপজেলার মাহিদিয়ার কাবুলের ইট ভাটা এলাকায় পৌঁছালে শিশিরের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা দুই রাউন্ড গুলি ছুড়ে।
ওসির দাবি, দুই পক্ষের গোলাগুলিতে শিশির গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় পুলিশের দুই সদস্যও আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে শিশিরকে ও আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশিরকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের ধোপাঘাট এলাকায় বুধবার ভোররাত ৩টার দিকে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে রুহুল আমিন রিপন (৩০) নামে এক যুবক নিহত হন।
নিহত রুহুল আমিন শহরের মীরগঞ্জ এলাকার কালু মিয়ার ছেলে।
বন্দুকযুদ্ধে জেলা গোয়েন্দা শাখার চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে পুলিশ দাবি করেছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি পাইপগান এবং ৬০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে। নিহত যুবকের লাশ জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তার বুকে ও পেটে গুলির আঘাতের তিনটি ক্ষত দেখা গেছে। আহত পুলিশ সদস্যরাও জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
নিহতের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা রয়েছে বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম।
রিপন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটিতে তিনি সম্পাদকীয় পদে ছিলেন।
আজকের বাজার/এমএইচ