৩ প্রতিবেশির বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় কাতারের অভিযোগ

বাণিজ্যিক অবরোধ আরোপ করা প্রতিবেশি তিন দেশের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায়(ডব্লিউটিও)আইনি অভিযোগ করেছে কাতার। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সৌদি আরব, বাইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই সোমবার বৃহৎ আকারে এ অভিযোগ দায়ের করেছে।

খবরে বলা হয়েছে, কাতার সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে ৮ পৃষ্ঠা এবং বাহরাইনের বিরুদ্ধে ৬ পৃষ্ঠার অভিযোগ জমা দিয়েছে।

‘অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতার জোর প্রচেষ্টা’ শিরোনামে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় কাতারের অভিযোগে অবরোধ আরোপের মাধ্যমে খাদ্য ও সেবা বাণিজ্য এবং মেধাস্বত্ত্ব বিষয়ে কীভাকে কাতারের অধিকার দমন করা হচ্ছে তা তুলে ধরা হয়।

খবরে বলা হয়েছে, কাতারের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পরিচালক আলী আলওয়ালিদ আল-থানি ডব্লিউটিও এর কাছে এই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে ওই তিন দেশকে প্রতিশোধমূলক বাণিজ্য অবরোধ নিষ্পত্তি করতে ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কাতার।

আলী আলওয়ালিদ আল-থানি বলেছেন, ওই দিন দেশ যদি তা না করে তবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় করা আইনি অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা তাদের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ আইনি ব্যাখ্যা শুনতে যথেষ্ট সময় দিয়েছি। কিন্তু সন্তোষজনক কোনো ফল নেই। আমার সবসময় আলোচনা ও সমঝোতার কথা বলে আসছি।

উল্লেখ, গত জুন মাসে চরমপন্থীদের মদদের অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর।

তবে কাতার সেই পদক্ষেপকে বিবেচনা বর্হিভূত সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। দোহার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসলামিক স্টেট বা ব্রাদারহুডের সঙ্গে তাদের কোনো আতাত নেই। তারা কোনো চরমপন্থী সংগঠনকে মদদ দিচ্ছে না।

এরপর দেশ চারটি চলমান সংকট নিরসনে কাতারকে ১৩টি শর্ত দেয় এবং তা মেনে নিতে ২ দফা সময় বেঁধে দেয়।

তবে কাতার সেইসব শর্ত প্রত্যাখান করে। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল-থানি সে সময় বলেন, এই দাবিগুলো প্রত্যাখানের কারণে কোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপকেও ভয় পায় না দোহা।

এর আগে গত ৫ জুন মধ্যপ্রাচ্যে চরমপন্থীদের মদদের অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়াত্ত বার্তা সংস্থা এসপিএ জানায়, সন্ত্রাসের হাত থেকে সৌদির জাতীয় সুরক্ষাকে নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।কাতারের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ইসলামী চরমপন্থীদের আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে ২০১৪ সালেও একবার সৌদি আরবের নেতৃত্বে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে আবুধাবী ও সংযুক্ত মানামা।

রিয়াদের অভিযোগ, সৌদির কোয়াতিফ প্রদেশ এবং বাহরাইনসহ কয়েকটি দেশের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে অর্থ ও তথ্য দিয়ে মদদ দিচ্ছে কাতার। কাতারের এই কর্মকাণ্ড দেশগুলোর নিরাপত্তা ও ঐক্য ধ্বংস করছে।

এর কয়েক দিন আগেই সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকানি ও সহায়তার অভিযোগে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা নিষিদ্ধ করে।

তখন অভিযোগ করা হয় কাতারের রাষ্ট্রীয় মদদে আল জাজিরা ইসলামীক স্টেট, ব্রাদারহুড ও আল কায়দার মতো সংগঠনগুলোকে মদদ দিচ্ছে। তখন এও বলা হচ্ছিল যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টানাপড়েনের কারণে সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে কাতার।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ১ আগষ্ট ২০১৭