৪ দেশের সঙ্গে সংলাপে বসতে চান কাতারের আমির

প্রতিবেশী চার দেশের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণার এক মাসেরও বেশি সময় পরে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।

গতকাল শুক্রবার কাতারের আমির এক টেলিভিষণ ভাষণে সৌদি আরবের নেতৃত্বে তাদের বয়কট করা ৪ দেশের সঙ্গে সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়েছেন।তিনি বলেছেন, দেশ চারটির সঙ্গে বৈঠকে বসতে প্রস্তত আছে কাতার। চলমান এই অচলাবস্থা নিরসনে যেকোনো সমাধানের প্রস্তাবে শ্রদ্ধাশীল থাকবে তার দেশ।

উল্লেখ, গত জুন মাসে চরমপন্থীদের মদদের অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর।

তবে কাতার সেই পদক্ষেপকে বিবেচনা বর্হিভূত সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। দোহার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসলামিক স্টেট বা ব্রাদারহুডের সঙ্গে তাদের কোনো আতাত নেই। তারা কোনো চরমপন্থী সংগঠনকে মদদ দিচ্ছে না।

এরপর দেশ চারটি চলমান সংকট নিরসনে কাতারকে ১৩টি শর্ত দেয় এবং তা মেনে নিতে ২ দফা সময় বেঁধে দেয়।

তবে কাতার সেইসব শর্ত প্রত্যাখান করে। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল-থানি সে সময় বলেন, এই দাবিগুলো প্রত্যাখানের কারণে কোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপকেও ভয় পায় না দোহা।

এদিকে গতকালের ভাষণে কাতারের আমির বলেছেন, যদি অবরোধ বা বয়কটের কারণে তার দেশ কার্যত কোনো সমস্যায়ই পড়েনি। তবুও এই অঞ্চলের রাজনৈতিক প্রয়োজনেই তারা প্রতিবেশীদেশগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। আর এজন্য তারা যেকোনো ধরনের মুক্ত সংলাপে বসার ব্যপারে আগ্রহী আছে।

গত ৫ জুন মধ্যপ্রাচ্যে চরমপন্থীদের মদদের অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়াত্ত বার্তা সংস্থা এসপিএ জানায়, সন্ত্রাসের হাত থেকে সৌদির জাতীয় সুরক্ষাকে নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।কাতারের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ইসলামী চরমপন্থীদের আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে ২০১৪ সালেও একবার সৌদি আরবের নেতৃত্বে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে আবুধাবী ও সংযুক্ত মানামা।

রিয়াদের অভিযোগ, সৌদির কোয়াতিফ প্রদেশ এবং বাহরাইনসহ কয়েকটি দেশের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে অর্থ ও তথ্য দিয়ে মদদ দিচ্ছে কাতার। কাতারের এই কর্মকাণ্ড দেশগুলোর নিরাপত্তা ও ঐক্য ধ্বংস করছে।

এর কয়েক দিন আগেই সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকানি ও সহায়তার অভিযোগে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা নিষিদ্ধ করে।

তখন অভিযোগ করা হয় কাতারের রাষ্ট্রীয় মদদে আল জাজিরা ইসলামীক স্টেট, ব্রাদারহুড ও আল কায়দার মতো সংগঠনগুলোকে মদদ দিচ্ছে। তখন এও বলা হচ্ছিল যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টানাপড়েনের কারণে সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে কাতার।

এদিকে কাতারের এই সংকটে ইরান ও তুরস্ক দেশটির পাশে এসে দাঁড়ায়েছি। ওই দুই দেশ কাতারে খাদ্য পাঠিয়েছে। এছাড়া শক্তি প্রদর্শনের জন্য তুরস্ক সেনা ও সামরিক যান পাঠিয়েছে।

যদিও আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান সৌদি আরবের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানা গেছে।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ২২ জুলাই ২০১৭