৯ বছরে জাতীয় গ্রিডে ১১,১০৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

গত ৯ বছরে জাতীয় গ্রিডে মোট ১১ হাজার ১০৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হয়েছে। আর এর ফলে বর্তমানে দেশের ৮৩ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে বলে বাসসের খবরে বলা হয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বরাতে বাসসের এক খবরে বলা হয়েছে, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৬ হাজার ৪৬ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে এবং বর্তমানে দেশের ৮৩ ভাগ মানুষ বিদ্যুতের সুবিধা পাচ্ছে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ন ও শিল্পায়ন ঘটেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য-আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে সরকার অতিরিক্ত ৮৫টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, ১ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন, ২ হাজার ৬২২ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করেছে।

এছাড়া ভারত, জাপান, চীন, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের সহযোগিতায় পাবলিক ও প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় সরকার ১৩টি মেগা প্রকল্প ও ৫ হাজার ৯২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান নসরুল হামিদ।

জ্বালানি বিনিয়োগ প্রসারণ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাস দিনে দিনে ফুরিয়ে যাওয়ার কারণে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে রূপান্তরিত জ্বালানির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে সরকার প্রাকৃতিক গ্যাসের পাশাপাশি ক্রমশঃ কয়লা, এলএনজি ও অন্যান্য সহজে প্রাপ্য জ্বালানি ব্যবহারের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও এই সেক্টরের সার্বিক উন্নয়নে সরকার পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান (পিএসএমপি)-২০১৬ তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে আরো সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি ও ভারত থেকে সাম্প্রতিক সময়ে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা নিয়েছে।

পাওয়ার সেল-এর মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন বাসসকে বলেন, বিদ্যুৎ খাতে বিদ্যুতের সিস্টেম লস ১৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ থেকে কমে ১২ দশমিক ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে এবং মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪৩৩ কেডব্লিউএইচ-এ পৌঁছেছে। দেশে এখন মোট গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭৪ লাখ।

তিনি বলেন, সরকার পিপিপি’র আওতায় প্রথমবারের মতো বৈদ্যুতিক সঞ্চালন প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন প্রথম আমলের সরকার ১৯৯৭ সালে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণকালে দেশে বিদ্যুতের চরম সংকট চলছিল। ওই সময় দেশে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট থাকলেও, উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। ওই সময় গ্রীষ্মকালে আট থেকে ১০ ঘণ্টার লোডশেডিং থাকায় জনগণকে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ১৬ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

আজকের বাজার:এলকে/ ৩ জানুয়ারি ২০১৮