মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের ওপর আরোপিত কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ১৩টি শর্ত দিয়েছে সৌদি আরব,সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর ও বাহরাইন। আর দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য কাতারকে ১০দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
কাতারে পাঠানো ওই চার দেশের শর্তের প্রথমেই আছে আল জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেলটি বন্ধ করার দাবি। এর পরের শর্ত হিসেবে ইরান ও তুরস্কের সঙ্গে সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাসের দাবিও করা হয়েছে। এছাড়া কাতারে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।
দাবিতে ওই এলাকার নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও বলা হয়েছে।
কাতারে অবস্থান করা ওই চার দেশের তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসীদের হস্তান্তরের দাবিও জানিয়েছে দেশ চারটি। চরমপন্থী যেকোনো সংগঠনে অর্থায়ন বন্ধ করার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে বলা হয়েছে।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর ও বাহরাইনের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্যও দেওয়ার জানিয়েছে তারা।
উল্লেখ, গত ৫ জুন মধ্যপ্রাচ্যে চরমপন্থীদের মদদের অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর।
তবে কাতার সেই পদক্ষেপকে বিবেচনা বর্হিভূত সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। দোহার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসলামিক স্টেট বা ব্রাদারহুডের সঙ্গে তাদের কোনো আতাত নেই। তারা কোনো চরমপন্থী সংগঠনকে মদদ দিচ্ছে না।
তবে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়াত্ত বার্তা সংস্থা এসপিএ জানায়, সন্ত্রাসের হাত থেকে সৌদির জাতীয় সুরক্ষাকে নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কাতারের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসলামী চরমপন্থীদের আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে ২০১৪ সালেও একবার সৌদি আরবের নেতৃত্বে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে আবুধাবী ও সংযুক্ত মানামা।
রিয়াদের অভিযোগ, সৌদির কোয়াতিফ প্রদেশ এবং বাহরাইনসহ কয়েকটি দেশের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে অর্থ ও তথ্য দিয়ে মদদ দিচ্ছে কাতার। কাতারের এই কর্মকাণ্ড দেশগুলোর নিরাপত্তা ও ঐক্য ধ্বংস করছে।
এর কয়েক দিন আগেই সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকানি ও সহায়তার অভিযোগে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা নিষিদ্ধ করে। তখন অভিযোগ করা হয় কাতারের রাষ্ট্রীয় মদদে আল জাজিরা ইসলামীক স্টেট, ব্রাদারহুড ও আল কায়দার মতো সংগঠনগুলোকে মদদ দিচ্ছে।
তখন বলা হচ্ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টানাপড়েনের কারণে সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে কাতার।
এদিকে কাতারের এই সংকটে ইরান ও তুরস্ক দেশটির পাশে এসে দাঁড়ায়েছি। ওই দুই দেশ কাতারে খাদ্য পাঠিয়েছে। এছাড়া শক্তি প্রদর্শনের জন্য তুরস্ক সেনা ও সামরিক যান পাঠিয়েছে।
যদিও আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান সৌদি আরবের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানা গেছে।
আজকের বাজার: এলকে/এলকে ২৪ জুন ২০১৭